বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীর বিলাসিতা ও অদ্ভুত কিছু শখ জেনে নিন

অনলাইন কেনাকাটার সংস্থা অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস শৌখিন মানুষ। শখ মেটাতে দামি জিনিস কেনায় তার জুড়ি নেই। তবে শখগুলো বেশ অদ্ভুত। কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভাঙা সব জিনিস কিনে মাঝে মধ্যেই তাক লাগিয়ে দেন তিনি।

২০২২ সালের হিসেবে তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৮০ কোটি মার্কিন ডলার। বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি জেফ। তাই জীবন যাপনও অত্যন্ত বিলাসবহুল।

তবে জেফ বেজোসের বিলাসিতার সংজ্ঞা একটু আলাদা। তাতে বাহুল্যের চেয়ে বিরলতার ভাগ একটু বেশি। সোজা কথায় দাম দিয়ে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা এমন জিনিস কেনেন, যা সচরাচর চোখে পড়ে না। তেমনই কিছু দামি আর বিরল আটটি জিনিসের তালিকা রইল।

প্রাইভেট জেটপ্লেন: জেফ চলাফেরা করেন প্রাইভেট জেটে। আমেরিকা থেকে ইউরোপ যাতায়াত চলতেই থাকে তার। জেফের কাছে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম দ্রুতগতির জেটপ্লেন। নাম জি-৬৫০ইআর। দাম সাড়ে ছয় কোটি আমেরিকান ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।

মিউজিয়াম বাড়ি: আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকার জন্য একটি বাড়ি কিনেছেন জেফ। তবে তাকে শুধু বাড়ি বললে কম বলা হয়। এককালে পোশাক এবং কাপড়ের জাদুঘর ছিল বাড়িটি। সেটিই কিনে নতুন করে সাজিয়েছেন জেফ। ভেতরে রয়েছে ১১টি শয়নঘর, ২৫টি স্নানঘর, পাঁচটি বসার ঘর এবং দুটি লিফ্ট। বাড়িটির দাম প্রায় আড়াই কোটি মার্কিন ডলার।

প্রাসাদ: নিউ ইয়র্কের বৈগ্রহিক বহুতল ২১২ ফিফ্থ অ্যাভিনিউয়ে বাড়ি বেজোসের। ওই বহুতলে মোট ১১.২ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে তার। ওই বহুতলে পেন্ট হাউস থেকে শুরু করে ফিটনেস রুম, গল্ফ খেলার জায়গা, আলাদা গেম খেলার ঘর, সিনেমা দেখার ছোট খাট হলঘর, সবই রয়েছে। প্রাসাদের মতোই তার সাজ সজ্জা।

হলিউডে বাড়ি: লস অ্যাঞ্জলেসের বেভারলি হিলসে থাকেন হলিউডের বড় বড় তারকারা। তাদেরই প্রতিবেশী বেজোস। প্রায় সাড়ে ৯ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সবুজে ঘেরা এলাকায় মাঝামাঝি বেজোসের বাড়ি। ১৬.৫ কোটি আমেরিকান ডলার দিয়ে কিনে নিয়েছেন গোটা একখানি এস্টেট। বাংলাদেশি টাকায় যার দাম দেড় হাজার কোটি টাকা।

সুপার ইয়ট: বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রমোদতরী বা সুপার ইয়টের মালিক জেফ। নাম ওয়াই ৭২১। দৈর্ঘ্য ৪১৭ ফুট। ২০১৮ সালে এটি তৈরি করার কাজ শুরু করতে বলেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা। এখন তার কাজ শেষ পর্যায়ে। দাম ৫০ কোটি আমেরিকান ডলার।

রোবট কুকুর: পোষ্য আছে জেফের। তবে সাধারণ চারপেয়ে লোমশ সঙ্গী নয়। তিনি রোবট কুকুর পোষেন। জেফের যান্ত্রিক চারপেয়ের নাম স্পট। দাম সাড়ে ৭৪ হাজার ডলার। স্পট ১৪ কেজি ওজনের জিনিসপত্র বইতে পারে। দরজা খুলতে পারে। এমনকি তার মালিকের জন্য পানীয়ও এনে দিতে পারে।

হ্রদের বাড়ি: ওয়াশিংটনের মেদিনা হ্রদের পাড়ে দুই হেক্টর জমির উপর একটি বাড়ির মালিক বেজোস। ওই বাড়ির লাগোয়া একটি হাউসবোটও রয়েছে। সব মিলিয়ে দাম প্রায় ১২ কোটি ডলার।

‘দৈত্য’ ঘড়ি: দৈত্যাকৃতি ঘড়ি বানাচ্ছেন বেজোস। উচ্চতা প্রায় ৫০০ ফুট। দেড়খানা স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে একটার পর একটা রেখে দিলে যে দৈর্ঘ্য হবে তার চেয়ে সামান্য বেশি।

পশ্চিম টেক্সাসের পাহাড়ি ঘড়িটি বানানোর জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি ডলার খরচ করছেন বেজোস। কাজও শুরু হয়ে গেছে। বেজোস জানিয়েছেন, এই ঘড়ি এমন ভাবে তৈরি করা হচ্ছে যা ১০ হাজার বছর চলবে।

এছাড়া নিজের গ্যারাজে অনলাইন বিকিকিনির বাজার খুলেছিলেন বেজোস। সেখান থেকে অ্যামাজন এখন গোটা বিশ্বের ই-বাণিজ্যের অন্যতম মাধ্যম। বেজোস শৌখিন মানুষ। তবে তার শখ মেটানোর সংস্থান ঘাম ঝরানো পরিশ্রম থেকে নিজেই করেছেন তিনি।